বাংলাদেশে ফেসবুকসহ আরও কয়েকটি যোগাযোগের অ্যাপ বন্ধ—খবরটা পুরোনো। আজকের খবর (ডিসেম্বর ৮, ২০১৫; সূত্র: প্রথম আলো) হচ্ছে শিগগিরই ফেসবুক ও অন্যান্য বন্ধ অ্যাপ খুলে দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এগুলো বন্ধের পেছনে যে-কারণ দেখানো হচ্ছে তা হচ্ছে: জননিরাপত্তা। অন্য কথায় বেশিরভাগ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কিছু মানুষের সাময়িক অসুবিধাকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। সরকার এক্ষেত্রে কতটুকু সফল সেটা বলার ইচ্ছা আমার নেই। তবে এঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্রষ্টার ঐশী বিধানের অন্যতম একটা দিক সহজে বোঝার একটা প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে।
ইসলাম তথা আল্লাহর মনোনীত একমাত্র জীবনব্যবস্থায় গোটা মানবজাতির কল্যাণের স্বার্থে হাতেগোণা কিছু কাজ বা বিষয় নিষিদ্ধ (হারাম) করা হয়েছে। এখানে ব্যক্তিস্বার্থকে আমলে না-নিয়ে গোটা মানবজাতির কল্যাণ, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করা হয়েছে। দুটো উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি সহজ করছি।
অনেকে দাবি তুলতে পারেন মদ খেয়ে আমি মাতাল হই না। কিংবা মাতাল হলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। কাজেই মদপান নিষিদ্ধ এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। কিন্তু কমনসেন্স হচ্ছে (এবং পরিসংখ্যানও তা-ই বলে) মদ খেয়ে বেশিরভাগ মানুষই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এতে একদিকে যেমন নিজের ক্ষতি হয়, অন্যদিকে অন্যান্যদেরও ক্ষতি হয়। কখনো কখনো তা মারাত্মক রূপ ধারণ করে। যদিও মদ নিষিদ্ধ করার মূল কারণ আল-'আলিম (মহাজ্ঞানী) আল্লাহই ভালো জানেন, তবে ইসলামি বিদ্বানরা সাধারণভাবে মদপান নিষিদ্ধ করার পেছনে যেসব কারণ তুলে ধরেন তার মধ্যে এটি একটি। যাই হোক, এখানে মূলনীতি হচ্ছে মানবজাতির সার্বিক কল্যাণের কথা বিবেচনায় রেখে কিছু মানুষের স্বার্থ উপেক্ষা করা।
বিয়ে-বহির্ভূত নারী-পুরুষের সম্পর্ক নিষিদ্ধ বা ইসলামে কেন নারী-পুরুষের পারস্পরিক মেলামেশায় কিছু "কঠিন" বিধি দেওয়া হয়েছে সেটা বোঝার জন্যও এই মূলনীতি বোঝা প্রয়োজন। অনেকে দাবি তুলবেন তার প্রেম পবিত্র। এখানে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই। কিন্তু একটু চোখ-কান খোলা রাখলেই আমরা বুঝতে পারব নারী-পুরুষের মধ্যকার বিয়ে-বহির্ভূত সম্পর্কের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্ষতিকর প্রভাব কত ভয়াবহ! এগুলোর মধ্যে রয়েছে: দম্পত্তিদের সম্পর্কে ফাটল-অবিশ্বাস, প্রতারণা, দৈহিক চাহিদা পূরণের জন্য অবৈধ উপায় অবলম্বন, পারিবারিক অশান্তি, ধর্ষণ, বিভিন্ন অশ্লীল কাজ, অপরিণত বয়সে আবেগের আতিশয্যে বিপরীত লিঙ্গের (বা সমলিঙ্গের) কারও সঙ্গে বিবেচনাহীন সম্পর্কে জড়ানো ইত্যাদি। মোদ্দাকথা একটি সমাজ গঠনের ন্যূনতম মৌলিক উপাদান পরিবার ব্যবস্থায় অস্থিতিশীলতা ও ভাঙনের অন্যতম দিক এটি: বিয়ে-বহির্ভূত নারী-পুরুষের সম্পর্ক, নারী-পুরুষের "অবাধ" মেলামেশা। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, দুএকজন মানুষের প্রেম যদি আসলেও পবিত্র হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এধরনের সম্পর্ক ও মেলামেশার প্রভাব নেতিবাচক। আল-হাকিম (প্রজ্ঞাময়) আল্লাহ, স্রষ্টা তাঁর সৃষ্টির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বেশ ভালোভাবে জানেন বলেই এই স্পর্শকাতর বিষয়ে কঠোর কিছু বিধি দিয়েছেন। এগুলো অমান্য করার "পরিমল" (পড়ুন "কুফল") হরহামেশাই আমাদের চোখে পড়ে; যদিও নিজের স্বার্থ উদ্ধার হয় বলে আমরা এক্ষেত্রে নীরব। দেশবাসীর কল্যাণের কথা, নিরাপত্তার কথা ভেবে বাংলাদেশ সরকার যে-কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা যদি আমরা বুঝতে পারি, এবং গ্রহণ করি, তাহলে ইসলামি জীবনব্যবস্থায় কেন কিছু বিষয় নিষিদ্ধ সেটা আমরা বেশ সহজে বুঝতে পারব।
অনেক ক্ষেত্রে হয়তো কোনো কিছু কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে তার আপাত কারণ আমাদের বুঝে আসবে না বা আসে না, কিন্তু আমরা যদি ইসলামি জীবনব্যবস্থা বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের বুনিয়াদ শক্ত করি, তাহলে বুঝতে পারব এখানে যা কিছু নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা শুধু কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য না, বরং সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের জন্যই। সাময়িকভাবে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমাদের কারও কারও জন্য সেসব নিষেধাজ্ঞা মানা কঠিন হলেও, বিশ্বমানবতার সামগ্রিক কল্যাণের খাতিরে সেটা মেনে নেওয়াটাই যুক্তি ও কমনসেন্সের দাবি।
সরকারকে ফাঁকি দিয়ে আমরা অনেকেই বিকল্প পন্থায় ফেসবুক ব্যবহার করছি। আইনিভাবে এটা সম্ভবত অপরাধ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এবং এজন্য সরকার ব্যবহারকারীদের ব্যাপারে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আর সেটা আইনিভাবে সঠিকও। আমি জানি না, সরকারের নজরদারী সকল বিকল্প উপায়ে ব্যবহারকারীদের উপর আছে কি না, কিন্তু আল-বাসির (যিনি সব দেখেন), মহান আল্লাহর নজরদারী পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের উপর রয়েছে। কাজেই এক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই। নিষিদ্ধ বা হারাম কাজগুলো করতে আমাদের যত ভালোই লাগুক না কেন, কিংবা সেটা আমাদের স্বার্থ যত সুন্দরভাবেই (!) হাসিল করুক না-কেন, মুসলিম বা আল্লাহর ইচ্ছের কাছে নিজের ইচ্ছেকে সঁপে দেওয়ার দাবি হচ্ছে এগুলো থেকে দূরে থাকা। আপনি যদি উপরের যুক্তিরধারা বুঝে থাকেন, তাহলে একমত হবেন যে, মানবতার দাবিও তা-ই। সুতরাং এক্ষেত্রে হারাম বা নিষিদ্ধ কাজে জড়ানোটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ, বিকল্প উপায়ে ফেসবুক ও অন্যান্য যোগাযোগ অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে না-হলেও, শেষ বিচারের দিনে মহান আল্লাহর কাছে যে জবাবদিহি করতে হবে তার কোনো "বিকল্প" নেই।
ইসলাম তথা আল্লাহর মনোনীত একমাত্র জীবনব্যবস্থায় গোটা মানবজাতির কল্যাণের স্বার্থে হাতেগোণা কিছু কাজ বা বিষয় নিষিদ্ধ (হারাম) করা হয়েছে। এখানে ব্যক্তিস্বার্থকে আমলে না-নিয়ে গোটা মানবজাতির কল্যাণ, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করা হয়েছে। দুটো উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি সহজ করছি।
অনেকে দাবি তুলতে পারেন মদ খেয়ে আমি মাতাল হই না। কিংবা মাতাল হলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। কাজেই মদপান নিষিদ্ধ এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। কিন্তু কমনসেন্স হচ্ছে (এবং পরিসংখ্যানও তা-ই বলে) মদ খেয়ে বেশিরভাগ মানুষই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এতে একদিকে যেমন নিজের ক্ষতি হয়, অন্যদিকে অন্যান্যদেরও ক্ষতি হয়। কখনো কখনো তা মারাত্মক রূপ ধারণ করে। যদিও মদ নিষিদ্ধ করার মূল কারণ আল-'আলিম (মহাজ্ঞানী) আল্লাহই ভালো জানেন, তবে ইসলামি বিদ্বানরা সাধারণভাবে মদপান নিষিদ্ধ করার পেছনে যেসব কারণ তুলে ধরেন তার মধ্যে এটি একটি। যাই হোক, এখানে মূলনীতি হচ্ছে মানবজাতির সার্বিক কল্যাণের কথা বিবেচনায় রেখে কিছু মানুষের স্বার্থ উপেক্ষা করা।
বিয়ে-বহির্ভূত নারী-পুরুষের সম্পর্ক নিষিদ্ধ বা ইসলামে কেন নারী-পুরুষের পারস্পরিক মেলামেশায় কিছু "কঠিন" বিধি দেওয়া হয়েছে সেটা বোঝার জন্যও এই মূলনীতি বোঝা প্রয়োজন। অনেকে দাবি তুলবেন তার প্রেম পবিত্র। এখানে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই। কিন্তু একটু চোখ-কান খোলা রাখলেই আমরা বুঝতে পারব নারী-পুরুষের মধ্যকার বিয়ে-বহির্ভূত সম্পর্কের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্ষতিকর প্রভাব কত ভয়াবহ! এগুলোর মধ্যে রয়েছে: দম্পত্তিদের সম্পর্কে ফাটল-অবিশ্বাস, প্রতারণা, দৈহিক চাহিদা পূরণের জন্য অবৈধ উপায় অবলম্বন, পারিবারিক অশান্তি, ধর্ষণ, বিভিন্ন অশ্লীল কাজ, অপরিণত বয়সে আবেগের আতিশয্যে বিপরীত লিঙ্গের (বা সমলিঙ্গের) কারও সঙ্গে বিবেচনাহীন সম্পর্কে জড়ানো ইত্যাদি। মোদ্দাকথা একটি সমাজ গঠনের ন্যূনতম মৌলিক উপাদান পরিবার ব্যবস্থায় অস্থিতিশীলতা ও ভাঙনের অন্যতম দিক এটি: বিয়ে-বহির্ভূত নারী-পুরুষের সম্পর্ক, নারী-পুরুষের "অবাধ" মেলামেশা। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, দুএকজন মানুষের প্রেম যদি আসলেও পবিত্র হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এধরনের সম্পর্ক ও মেলামেশার প্রভাব নেতিবাচক। আল-হাকিম (প্রজ্ঞাময়) আল্লাহ, স্রষ্টা তাঁর সৃষ্টির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বেশ ভালোভাবে জানেন বলেই এই স্পর্শকাতর বিষয়ে কঠোর কিছু বিধি দিয়েছেন। এগুলো অমান্য করার "পরিমল" (পড়ুন "কুফল") হরহামেশাই আমাদের চোখে পড়ে; যদিও নিজের স্বার্থ উদ্ধার হয় বলে আমরা এক্ষেত্রে নীরব। দেশবাসীর কল্যাণের কথা, নিরাপত্তার কথা ভেবে বাংলাদেশ সরকার যে-কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা যদি আমরা বুঝতে পারি, এবং গ্রহণ করি, তাহলে ইসলামি জীবনব্যবস্থায় কেন কিছু বিষয় নিষিদ্ধ সেটা আমরা বেশ সহজে বুঝতে পারব।
অনেক ক্ষেত্রে হয়তো কোনো কিছু কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে তার আপাত কারণ আমাদের বুঝে আসবে না বা আসে না, কিন্তু আমরা যদি ইসলামি জীবনব্যবস্থা বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের বুনিয়াদ শক্ত করি, তাহলে বুঝতে পারব এখানে যা কিছু নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা শুধু কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য না, বরং সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের জন্যই। সাময়িকভাবে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমাদের কারও কারও জন্য সেসব নিষেধাজ্ঞা মানা কঠিন হলেও, বিশ্বমানবতার সামগ্রিক কল্যাণের খাতিরে সেটা মেনে নেওয়াটাই যুক্তি ও কমনসেন্সের দাবি।
সরকারকে ফাঁকি দিয়ে আমরা অনেকেই বিকল্প পন্থায় ফেসবুক ব্যবহার করছি। আইনিভাবে এটা সম্ভবত অপরাধ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এবং এজন্য সরকার ব্যবহারকারীদের ব্যাপারে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আর সেটা আইনিভাবে সঠিকও। আমি জানি না, সরকারের নজরদারী সকল বিকল্প উপায়ে ব্যবহারকারীদের উপর আছে কি না, কিন্তু আল-বাসির (যিনি সব দেখেন), মহান আল্লাহর নজরদারী পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের উপর রয়েছে। কাজেই এক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই। নিষিদ্ধ বা হারাম কাজগুলো করতে আমাদের যত ভালোই লাগুক না কেন, কিংবা সেটা আমাদের স্বার্থ যত সুন্দরভাবেই (!) হাসিল করুক না-কেন, মুসলিম বা আল্লাহর ইচ্ছের কাছে নিজের ইচ্ছেকে সঁপে দেওয়ার দাবি হচ্ছে এগুলো থেকে দূরে থাকা। আপনি যদি উপরের যুক্তিরধারা বুঝে থাকেন, তাহলে একমত হবেন যে, মানবতার দাবিও তা-ই। সুতরাং এক্ষেত্রে হারাম বা নিষিদ্ধ কাজে জড়ানোটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ, বিকল্প উপায়ে ফেসবুক ও অন্যান্য যোগাযোগ অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে না-হলেও, শেষ বিচারের দিনে মহান আল্লাহর কাছে যে জবাবদিহি করতে হবে তার কোনো "বিকল্প" নেই।
No comments:
Post a Comment
আপনার সুচিন্তিত ও গঠনমূলক মতামতের জন্য ধন্যবাদ।